মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে ‘থার্ড পার্টি’র ভোট!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বরাবরই মূল লড়াই ডেমোক্রেট আর রিপাবলিকানদের মধ্যে। নির্বাচনকেন্দ্রিক বেশিরভাগ জরিপেও কেবল ট্রাম্প-কমালার পরিসংখ্যানের হিসেব নিকেশ। অথচ এই দুই প্রার্থী ছাড়াও নির্বাচনে লড়ছেন স্বতন্ত্র এবং বিভিন্ন পার্টির তিন প্রার্থী।

ট্রাম্প-কমালা ছাড়াও এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত নাম জিল স্টেইন। তৃতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজের জন্য লড়ছেন গ্রিন পার্টির এই প্রার্থী। ২০১২ ও ২০১৬ সালের ফলাফলে চতুর্থ অবস্থানে ছিলেন এই পরিবেশ অধিকারকর্মী। এবারের নির্বাচনে স্যুইং স্টেটগুলোতে ট্রাম্প-কমালার পাশাপাশি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন জিল স্টেইন।

বিশ্লেষকদের মতে পেনসিলভানিয়া, মিশিগান এবং উইসকনসিনের মতো আসনগুলোতে ভালো রকমের প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে গ্রিন পার্টি। বিশেষত, ইসরায়েল বিরোধী অবস্থানের কারণে মিশিগানে মুসলিম ভোটারদের অনেকটাই বাগে আনতে পেরেছেন সাবেক এই চিকিৎসক।

গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জিল স্টেইন বলেন, আমি মনে করি ডেমোক্রেটরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছে। এটা বিভিন্ন জরিপেই উঠে আসছে। মিশিগান, অ্যারিজোনা, মিনেসোটা, উইসকনসিন এবং জর্জিয়ায় তারা অনেক ঝুঁকিতে। তারা মার্কিন মুসলিমদের আস্থা হারিয়েছেন। ডেমোক্রেটরা যদি ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতো তাহলে এমনটা হতো না। কিন্তু তারা সেটি করেনি। তারা নির্বাচনে হারতে রাজি অথচ গণহত্যা বন্ধে নয়।

ট্রাম্প এবং রিপাবলিকানদের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত আরেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চেজ অলিভার। লিবারটেরিয়ান পার্টির হয়ে এবারই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন তিনি। অবশ্য, ২০২২ সালের জর্জিয়ার সিনেটর পদেও লড়েছেন ৩৯ বছর বয়সী এই অধিকারকর্মী। অভিবাসন নীতি সহজ করা, সকল বৈশ্বিক সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনাসহ ইসরায়েল ও ইউক্রেনে সহায়তা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চেজ অলিভার।

লিবারটেরিয়ান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী চেজ অলিভার বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় তা হলো, প্রতিবছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের সেনাবাহিনীর পেছনে হাজার হাজার বিলিয়ন ডলার খরচ করছি। যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা আমাদের নিরাপদ রাখবে। কিন্তু মার্কিন সেনাবাহিনীর লক্ষ্য থাকা উচিত যুক্তরাষ্ট্রকে আগ্রাসন থেকে বাঁচানো। কিন্তু আমরা নিজেদের নিরাপদ রাখতে বিদেশের মাটিতে লড়াই করছি, যেটার কোনো দরকারই নেই।

এছাড়াও, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন ৭১ বছর বয়সী স্বতন্ত্র করনেল ওয়েস্ট। প্রথমে বাম ধারার পিপলস পার্টির হয়ে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দিলেও পরবর্তীতে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন এই দার্শনিক। কয়েক দশক ধরে ডেমোক্রেটিক রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক করনেল ওয়েস্ট। ভোটে জয়ের জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতিসহ মার্কিনীদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, ৩৫ বছর বয়সী যেকোনো নাগরিকই লড়তে পারবেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। তবে, ব্যালট পেপারে নাম লেখাতে হলে, প্রতিটি রাজ্যে আলাদা করে দিতে হয় জনসমর্থনের প্রমাণ। জয়লাভের ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকলেও ফলাফল প্রভাবিত করতে পারেন, থার্ড পার্টির প্রার্থীরা। আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।