মার্কিন নির্বাচন: কী এই ইলেক্টোরাল কলেজ?

আর পাঁচটা গণতান্ত্রিক দেশের মতো নয় যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন। সাধারণ ভোটারদের সরাসরি ভোটে নয়; ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে নির্বাচিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট। ইলেক্টোরাল কলেজ মূলত একটি ব্যতিক্রমী নির্বাচনী প্রক্রিয়া। যে প্রক্রিয়ায় সাধারণ ভোটাররা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নয়; বাছাই করে একটি নির্বাচক দল। পরবর্তীতে সেই নির্বাচক দলের ভোটে চূড়ান্ত হয় কে হবেন দেশের প্রেসিডেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টার্ম ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’। কিন্তু কী এই ইলেক্টোরাল কলেজ? মূলত একটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া এটি। যেখানে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে একটি নির্বাচক দল বাছাই করেন সাধারণ মার্কিনীরা।

জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইলেক্টোরাল কলেজই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন। সাধারণ নির্বাচনের আগে দুই দলই প্রতিটি নির্বাচনী আসনে নিজেদের মনোনীত ইলেক্টোরাল ভোটারের তালিকা জমা দেয়, যাকে বলা হয় স্লেট। নির্বাচনে যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে বেশি ভোট পড়ে, তার দলের স্লেটটিই ইলেক্টোরাল ভোটার হিসেবে নির্বাচিত হয়।

কোন অঙ্গরাজ্যে কত ইলেক্টোরাল ভোট থাকবে, তা নির্ধারিত হয় আসন সংখ্যার ভিত্তিতে। প্রতিটি আসনের জন্য একটি করে এবং দুজন সিনেটরের জন্য দুটি ভোট বরাদ্দ থাকে। মূলত, অঙ্গরাজ্য গুলোর জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় নির্বাচকের সংখ্যা। যে কারণে, জনবহুল ক্যালিফোর্নিয়ার রয়েছে ৫৪, আবার কম জনসংখ্যার মন্টানার রয়েছে মাত্র ৩জন নির্বাচক।

সাধারণ নির্বাচনের পর এই ইলেক্টোরাল ভোটাররা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য আলাদা ব্যালটে ভোট দেন। তাদের ভোট গণনার জন্য কংগ্রেস চেম্বারে অনুষ্ঠিত হয় আরেকটি সভা। যে প্রার্থী ম্যাজিক ফিগার ২৭০টি বা তার বেশি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন তিনিই হবেন বিশ্বের ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট।

কোনো অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দলের ঝুলিতে জমা হয় ওই অঙ্গরাজ্যের নির্ধারিত সব ইলেক্টোরাল ভোট। তবে, ব্যাতিক্রম মেইন ও নেব্রাস্কা। এই দুই অঙ্গরাজ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টিত হয় ইলেক্টোরাল ভোটার। গোটা রাজ্যে যে দল বিজয়ী হবে তারা পাবেন ২টি ইলেক্টোরাল ভোট। এবং প্রতিটি নির্বাচনী আসনের বিপরীতে বিজয়ী দলের পক্ষে জমা হবে একটি করে ভোট।

পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মোট ইলেক্টোরাল ভোটার ৫৩৮ জন। ‘উইনার টেক ইট অল’ নীতির কারণে পুরো দেশের মোট ভোটের হিসেবে এগিয়ে থেকেও পর্যাপ্ত ইলেক্টোরাল ভোট না পেলে পরাজিত হতে হয় প্রার্থীকে। আর তাই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, নিউইয়র্ক, ইলিনয়, পেনসিলভানিয়া। কারণ, এই ৬ অঙ্গরাজ্যের হাতেই রয়েছে ১৯১টি ইলেক্টোরাল ভোট।